ইমরান
রাজশাহী
প্রশ্ন : টমেটোর নাবি ধসা (লেইট ব্লাইট) হলে তার প্রতিকার কী?
উত্তর : ১.সুস্থ টমেটো ফসল থেকে বীজ সংগ্রহ করতে হবে।
২. রোগ প্রতিরোধ সম্পন্ন জাতের টমেটো চাষ করতে হবে।
৩. রোগ দেখা মাত্র সেচ প্রয়োগ বন্ধ রাখতে হবে।
৪. পেনকোজেব ৮০ ডব্লিউপি অথবা রিডোমিল ৭২ এমজেড প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম মিশিয়ে ১৫ দিন পর পর ২ থেকে ৩ বার স্প্রে করতে হবে।
আনিসুর রহমান
সিরাজগঞ্জ
প্রশ্ন : আগাছা দমনের কার্যকর পদ্ধতি কোনটি।
উত্তর :বিভিন্ন ধানের জাত ও মৌসুম ভেদে আগাছার সঙ্গে ধান গাছের প্রতিযোগিতার ভিন্নতা লক্ষ করা যায়। সাধারণত ধান গাছ যত দিন মাঠে থাকে তার তিন ভাগের প্রথম ভাগ সময় জমি আগাছামুক্ত রাখলে আশানুরূপ ফলন পাওয়া যায়। হাত দিয়ে, নিড়ানি যন্ত্রের সাহায্যে, আগাছানাশক ব্যবহার করে এবং জৈবিক পদ্ধতিতে আগাছা দমন করা যায়। আগাছা দমনে নির্দিষ্ট একটি পদ্ধতি ততটা কার্যকর না হওয়াই স্বাভাবিক। যখন যেখানে যে পদ্ধতি প্রয়োগ করার উপযোগী এবং অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক সেখানে সেই পদ্ধতি ব্যবহার করা উচিত। এ কারণে সমন্বিত পদ্ধতিতে আগাছা দমন বর্তমানে খুবই কার্যকর। সমন্বিত পদ্ধতিতে আগাছা ব্যবস্থাপনা হলো-
আগাছামুক্ত পরিষ্কার বীজ ব্যবহার করতে হবে। তাহলে আগাছার পরিমাণ কম হবে।
জমিতে ভালোভাবে প্রস্তুত করলে আগাছার পরিমাণ কম হবে।
জমিতে অনেক সময় আগাছানাশক ছিটানোর পরও কিছু আগাছা থেকে যায়। এক্ষেত্রে একবার হাত নিড়ানি দিয়ে জমি আগাছামুক্ত করা যায়।
ব্রি উইডার দিয়ে আগাছা পরিষ্কার করে জমিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি রাখলে আগাছার পরিমাণ কম হয়।
শাহাদাৎ
কক্সবাজার
প্রশ্ন : বেগুন-টমেটোর ঢলে পড়া রোগের প্রতিকার কী?
উত্তর : ঢলে পড়া রোগটি টমেটো, আলু ও বেগুনে বেশি দেখা দেয়। গাছ বৃদ্ধির যে কোনো সময় এ রোগ হতে পারে এবং ব্যাপক ক্ষতি করে।
প্রতিকার : ১. গাছের পরিত্যক্ত অংশ নষ্ট করতে হবে।
২. রোগাক্রান্ত গাছ দেখামাত্র মাটিসহ তুলে নিয়ে নষ্ট করা ও সেচ প্রয়োগ বন্ধ রাখা।
৩. রোগ সহনশীল জাত চাষ করা।
৪. সুস্থ চারা সংগ্রহ করা।
৫. শস্য পর্যায়ক্রম অনুসরণ করে দানা জাতীয় ফসল যেমন গম ও ভুট্টার চাষ করা।
৬. মাটি শোধন করা। জমি কাদা করে সপ্তাহ খানেক পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখলে মাটি শোধন হয়।
৭. হেক্টরপ্রতি ২০ কেজি স্টেবল ব্লিচিং পাউডার শেষ চাষের সময় মাটিতে প্রয়োগ করা।
মহিদুল ইসলাম
চকোরিয়া
প্রশ্ন : নারিকেল কচি অবস্থায় ঝরে যায় কেন?
উত্তর : বাগানের মাটিতে রসের অভাব, রোগ-পোকার আক্রমণ, সময় উপযোগী পরিচর্যার অভাব, খাদ্য ও হরমোন ঘাটতির ফলে ফল ঝরে যায়। নারিকেল ফল ঝরা রোধের জন্য গাছের গোড়ায় সুষম মাত্রায় জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হবে। পূর্ণ বয়স্ক অর্থাৎ ১০ বছরের অধিক বয়সের নারিকেল গাছে প্রতি বছর গোবর সার ২৫ কেজি, ইউরিয়া ১ কেজি, টিএসপি ৫০০ গ্রাম, এমওপি ২ কেজি, জিপসাম ৩৫০ গ্রাম, জিংক সালফেট ১০০ গ্রাম এবং বরিক এসিড ৩০ গ্রাম দিতে হবে। সার দুই কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হবে। প্রথম কিস্তিতে অর্ধেক সার মধ্য বৈশাখ থেকে মধ্য জ্যৈষ্ঠ (মে) এবং দ্বিতীয় কিস্তিতে বাকি অর্ধেক সার মধ্য ভার্দ্র থেকে মধ্য আশি^ন (সেপ্টেম্বর) মাসে গাছের গোড়া থেকে চারদিকে ১ মিটার জায়গা বাদ দিয়ে ১ থেকে ২.৫ মিটার দূর পর্যন্ত মাটিতে ২০ থেকে ৩০ সেন্টিমিটার গভীরে প্রয়োগ করতে হবে।
সুমন
নওগাঁ
প্রশ্ন : বেগুনের ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা কীভাবে দমন করা যায়?
উত্তর : বেগুনের ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকার আক্রমণ দমন করতে বেগুনের ক্ষেত সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। সপ্তাহে অন্তত একবার পোকা আক্রান্ত ডগা ও ফল বাছাই করে বিনষ্ট করতে হবে। সেক্স ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করে এ পোকার আক্রমণ ও বংশ বিস্তার রোধ করা যায়। আক্রমণের মাত্রা বেশি হলে প্রতি লিটার পানিতে সাইপারমেথ্রিন (রিপকর্ড) ১ মিলিলিটার, ডায়াজিনন বা সুমিথিয়ন ১.৫ থেকে ২ মিলি. হারে মিশিয়ে জমিতে ভালোভাবে স্প্রে করতে হবে।
মজিবর রহমান
রংপুর
প্রশ্ন : মাছের পেট ফোলা রোগ হয় এবং মারা যায়, এর প্রতিকার কী?
উত্তর : সাধারণত পুকুরের পানি দূষিত হলে মাছ এ ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। মূলত পুকুরের নিচে খুব বেশি কাদা থাকলে, তলদেশে কিছু পচলে বা বাইরে থেকে দূষিত পানি প্রবেশ করলে পানি দূষিত হয়ে থাকে ও মাছের এ ধরনের রোগ হয়। এ ক্ষেত্রে সিরিঞ্জ দিয়ে পেট থেকে পানি বের করে দিতে হবে। আক্রান্ত মাছ আলাদা করতে হবে। মাছের খাবারের সঙ্গে টেরামাইসিন ক্যাপসুলের গুঁড়া (১ গ্রাম-১ কেজি) মিশাতে হবে। অক্সিজেনে অভাবে এ রোগ হয়। ঘনত্ব কমিয়ে, চুন প্রয়োগ ও জাল টেনে বা হররা টেনে অক্সিজেন তৈরি করে প্রতিরোধ করা যায়। লক্ষণ : মাছের পেটে গ্যাস জমে যায়, পানির পিএইচ বেড়ে গেলে মাছ খেতে পারে না। রোগাক্রান্ত পুকুরে প্রতি শতাংশে ১০০ গ্রাম করে টিএসপি ২ বার ৭ দিন অন্তর অন্তর দিতে হবে।
মো. আশরাফুল
কুড়িগ্রাম
প্রশ্ন : মাছে লেজ ও পাখনা পচা রোগ হয়েছে- কী করা যায় ?
উত্তর : এটি মাছের এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ। পুকুরের পানি ও পরিবেশ নোংরা হলে এ ধরনের রোগ হয়। তাছাড়া পানির ক্ষার স্বল্পতা ও পিএইচ ঘাটতি দেখা দিলেও এ রোগের সৃষ্টি হতে পারে। পটাসিয়াম পারম্যাঙ্গানেট ২৫ থেকে ৩৫ গ্রাম প্রতি শতাংশে এবং তুঁতে ৬ গ্রাম প্রতি শতাংশে ১ ফুট গভীরতার জন্য দিতে হবে। অথবা ১০ লিটার পানিতে ১ চা চামচ পটাসিয়াম পারম্যাঙ্গানেট দিয়ে পোনাগুলোকে গোসল করাতে হবে।
তুঁতে ১ গ্রাম-১ লিটার পানির সঙ্গে মিশিয়ে উহাতে আক্রান্ত মাছ কে কিছুক্ষণ রেখে তারপর পুকুরে ছেড়ে দিতে হবে।
চুন আধা কেজি প্রতি শতকে অথবা জিওলাইট ১০ কেজি প্রতি একরে প্রয়োগ করতে হবে।
মাকসুদুর রহমান
রংপুর
প্রশ্ন : গাভী হিটে আসছে না কী করণীয়?
উত্তর : সাধারণত হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে এই রোগ হয়ে থাকে। ভিটা এভিই ১০০ সিসি বোতলে পাওয়া যায়, ১০০ কেজি ওজনের জন্য ২০ মিলি করে প্রতি সপ্তাহে ১ বার করে ১ মাস খাওয়াতে হবে। কৃমির ট্যাবলেট দিতে হবে।
ফার্টাজাইল ইনজেকশন প্রতি গাভীকে ৫ মিলিলিটার হিসেবে মাংসপেশিতে ইনজেকশন দিতে হয়। ফলে গাভী ১৭ দিন পরই গরম হবে।
মো. আহাদ
গাজীপুর
প্রশ্ন : গরু পায়ে আঘাত পেয়েছে কী করণীয়?
উত্তর : ইনজেকশন ট্রাইজনভেট ৫০ কেজি গরুর দৈহিক ওজনের জন্য ৫ সিসি এক বার মাংসে পুশ করতে হবে। এভাবে ৩ দিন প্রদান করতে হবে।
কৃষিবিদ মোহাম্মদ মারুফ
* কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ, কৃষি তথ্য সার্ভিস, খামারবাড়ি, ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫, মোবাইল : ০১৫৫২৪৩৫৬৯১